নিজস্ব প্রতিবেদন :
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার জাহাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও তার ছেলের বিরুদ্ধে নিলাম ছাড়াই লক্ষাধিক টাকার পানি পরিশোধন প্ল্যান্টের লোহার খাঁচা সহ সকল মালামাল বিক্রির অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনার ৬ দিনেও প্রশাসন অভিযুক্ত সাবেক চেয়ারম্যান ও তার ছেলের বিরুদ্ধে কোন প্রকার ব্যবস্থা না নেয়ায় চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে স্থানীয়দের মধ্যে।
স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, বিগত প্রায় ১৫ বছর আগে জাহাপুর ইউনিয়নের বড়ইয়াকুড়ি গ্রামে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ তৌফিক মীর এর বাড়ীতে আর্সেনিকমুক্ত পানির জন্য পানি পরিশোধন প্ল্যান্ট স্থাপন করে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল। গত কয়েক বছর ধরে সেখানে পানি পরিশোধন না করার ফলে পুরো প্ল্যানটি পরিত্যক্ত হয়ে যায়।
বড়ইয়াকুড়ি গ্রামের বাবুল স্বর্ণকার জানান, গত শুক্রবার (৪ আগষ্ট) জুম্মার নামাজের পরে কিছু লোক এগুলো ভেঙে নিয়ে যাচ্ছে তাদেরকে জিজ্ঞেস করার পর তারা জানায় সাবেক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ তৌফিক মীর ও তার ছেলে সৈয়দ হাসান ২৭ হাজার টাকার বিনিময়ে একই গ্রামের জীবন মিয়ার কাছে বিক্রয় করেছে।
তবে বর্তমান চেয়ারম্যান সৈয়দ সওকত আহমেদ বাধা দিলেও তারা শোনেনি।
এ বিষয়ে জীবন মিয়ার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, আমরা কয়েকজনে মিলে ২৭ হাজার টাকার বিনিময়ে পানি পরিশোধন প্ল্যান্ট এর লোহার খাঁচা সহ সকল জিনিসপত্র সাবেক চেয়ারম্যান ও তার ছেলের কাছ থেকে ক্রয় করেছি। তবে এ বিষয়টি বর্তমান চেয়ারম্যান কেও আমরা জানিয়েছি তিনি জানেন। এখন পর্যন্ত টাকা পরিশোধ করিনি, এটি নাকি উপজেলায় দিতে হবে সেজন্য।
অভিযুক্ত সাবেক জাহাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ তৌফিক মীর বলেন, এই পানি পরিশোধন প্ল্যান্ট আমি একটি এনজিও থেকে এনেছিলাম। পানি পরিশোধন না করায় দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত ছিল। বর্তমান চেয়ারম্যান তার বাড়িতে যাবার সুবিধার্থে সে বিক্রয় করে দিয়েছে। আমি এ ব্যাপারে কিছুই জানিনা। মূলত আমার দীর্ঘদিনের অর্জিত সুনাম নষ্ট করার জন্য একটি মহল আমার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছে।
আরেক অভিযুক্ত সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ তৌফিক মীরের ছেলে সৈয়দ হাসান বলেন, বর্তমান চেয়ারম্যান এটি বিক্রি করেছে আমরা শুনেছি। এখন কি কারনে আমাদের বিরুদ্ধে এ ধরনের মিথ্যা অভিযোগ তোলা হচ্ছে একমাত্র আল্লাহই ভাল জানে। আমরা বিক্রি বা টাকা এ ব্যাপারে কিছুই জানিনা।
জাহাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ সওকত আহমেদ বলেন, আমি শুনেছি কে বা কাহারা পানি পরিশোধন প্ল্যান্টটি ভেঙে নিয়ে গেছে। যেহেতু এটি সরকারি সম্পত্তি আমি চাই প্রশাসন সুষ্ঠু তদন্ত করে এর যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করুক।
এ বিষয়ে মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ আলাউদ্দীন ভূঞা জনী বলেন, এ ধরনের কাজ করতে হলে প্রথমেই নিলামের মাধ্যমে দাম নির্ধারণ করে বিক্রয় করতে হয়। পরে সেই টাকা সরকারি রাজস্ব খাতে ব্যবহার করতে হয়। এখানে তার কোনটাই করা হয়নি। বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে, তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।